গোষ্ঠীবদ্ধ বসতি গড়ে ওঠার কারণ

প্রাকৃতিক কারণ

1. ভূপ্রকৃতি ও মৃত্তিকা :
বহুদূর বিস্তৃত সমভূমি এবং উর্বর মৃত্তিকা বহু কৃষিজিবিকে একত্রে সন্ধিবদ্ধ করে ও সেখানে বাস করতে সাহায্য করে। গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে, ঝাড়খণ্ডের মালভূমি অঞ্চলের সমতল পৃষ্ঠে গোষ্ঠীবদ্ধ বসতি গড়ে উঠেছে।

2. ভৌম জলের আপেক্ষিক অভাব এবং গভীর ভৌম জলতল :
 গোষ্ঠীবদ্ধ জনবসতি গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে ভৌম জলের অভাব একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যেখানে জল পাওয়া দুষ্কর যেমন মরুভূমি অঞ্চল; সেখানে পানীয় ও চাষের জল পাওয়ার জন্য গভীর কুূপ খনন করতে হয় সেখানে কূপের চারপাশে গোষ্ঠীবদ্ধ বসতি গড়ে ওঠে।

3. প্রতিকূল পরিবেশ :
প্রতিকূল পরিবেশে মানুষ দলবদ্ধভাবে গোষ্ঠীবদ্ধ বসতি গড়ে তোলে। জলাভূমি, প্রস্তরময় ভূমি ইত্যাদি প্রতিকূল পরিবেশে মানুষ এই ধরনের বসতি গড়ে তোলে।

অর্থনৈতিক ও সামাজিক কারণ

1. সামাজিক সান্নিধ্য :
মানুষ সমাজবদ্ধ জীব, ঘনিষ্ঠ সামাজিক সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য মানুষ একত্রে বড় বসতিতে বাস করতে উৎসাহিত হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষ পুঞ্জাকৃতি গ্রাম অথবা শহরে বাস করতে উৎসাহিত। বিক্ষিপ্ত বসতি অপেক্ষা গোষ্ঠীবদ্ধ বসতি গুলিতে শিক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগ বেশি পাওয়া যায়।

2. কৃষিকাজে সহযোগিতা :
স্থায়ী কৃষি ব্যবস্থা গোষ্ঠীবদ্ধ বসতির জন্ম দেয় যেমন কৃষিতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি যেমন লাঙ্গল, কোদাল, কাশতে, গরুর গাড়ি, বলদ ইত্যাদি পরস্পরের মধ্যে প্রায়ই একে অন্যের কাছ থেকে ধার নেয় ফলে সেখানে গোষ্ঠীবদ্ধ বসতি গড়ে ওঠে।

3. নিরাপত্তার অভাব :
নিরাপত্তার কারনেও গোষ্ঠীবদ্ধ বসতি গড়ে ওঠে। যে সমস্ত অঞ্চলে প্রায়ই সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ ঘটে, দস্যুরা প্রায়ই হানা দেয় বা পশু দ্বারা আক্রান্ত হওয়া সম্ভাবনা আছে সেখানে মানুষ গোষ্ঠী বদ্ধ ভাবে থাকতে শুরু করে। 
4. সামাজিক ও অর্থনৈতিক বন্ধন :
কৃষিতে পারস্পরিক সহযোগিতা ছাড়াও সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গ্রামবাসীদের মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা লক্ষ্য করা যায়। গ্রামের কেন্দ্রস্থল গাছের ছায়ায় অথবা মন্দির প্রাঙ্গণে গ্রামবাসীদের জড়ো হওয়া, উৎসবের সময় একসঙ্গে আনন্দ করা ইত্যাদি মেলবন্ধন থাকার কারণেও সেখানে গোষ্ঠীবদ্ধ জনবসতি গড়ে ওঠে।

এছাড়াও ধর্ম ও কুসংস্কারের কারণে বিভিন্ন কর্ম ক্ষেত্রের উদ্দেশ্যে গোষ্ঠীবদ্ধ জনবসতি গড়ে উঠতে দেখা যায়।

Post a Comment

এই তথ্যের ব্যাপারে আরো কিছু জানা থাকলে বা অন্য কোনো প্রশ্ন থাকলে এখানে লিখতে পারেন ।