আদর্শ পাঠক্রম গঠনের নীতি সমূহ আলোচনা কর ?

আদর্শ পাঠক্রমের ক্ষেত্রে কি কি নীতি অনুসরণ করা হয় তা ব্যক্ত কর?

সূচনা:- 

পাঠক্রমে উৎকর্ষের উপর শিক্ষার সাফল্য নির্ভর করে। পৃথিবীতে একটি জাতি বা রাষ্ট্র পরিচিতি হয় বসবাসকারী জনগণের মধ্য দিয়ে, আর মানুষ তৈরি করার জন্য যেসব শক্তিশালী উপাদান প্রয়োজন তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ ও সহষ্ট হলো শিক্ষা। প্রাকৃতিক শিক্ষাই মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করে। যথার্থ শিক্ষা নির্ভর করে শিক্ষকের গুণাবলী ও পাঠক্রমের উপর তবে কয়েকটি মৌলিক নীতির উপর ভিত্তি করে একটি আদর্শ পাঠক্রম রচনা করা হয়।


আদর্শ পাঠক্রমের নীতি
         1. বিষয় নির্বাচনের নীতি
         2. উপাদান বিন্যাসের নীতি
         3. প্রয়োজন গত বা প্রয়োগ গত নীতি

 প্রশ্নানুশারে নিম্নোক্ত পাঠক্রম গঠনের উক্ত নীতি গুলি সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।

 বিষয় নির্বাচনের নীতি

1. শিশুকেন্দ্রিকতার নীতি:-

আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় শিশু অর্থাৎ শিক্ষার্থী পাঠক্রমের কেন্দ্রবিন্দু সেই কারণে শিশুর চাহিদা, আগ্রহ, সাফল্য প্রভৃতির উপর লক্ষ্য রেখেই আদর্শ পাঠক্রম রচনা করা বা তৈরি করা হয়।

2. উদ্দেশ্য কেন্দ্রীকতার নীতি :-

প্রতিটি শ্রেণীতে বিষয় শিক্ষার উদ্দেশ্য সব থাকে সেই জন্য উক্ত উদ্দেশ্যকে গুরুত্ব দিয়ে বিচার বিশ্লেষণের মাধ্যমে পাঠক্রমে বিষয়বস্তু রচনা করা একান্ত প্রয়োজন।

3. সৃজনশীলতা নীতি :-

এই নীতি পাঠক্রমে শিক্ষার্থীর সৃজন মূলক ক্ষমতা বিকাশ সাধনে সাহায্য করে। প্রতিটি শিশুর মধ্যেই সৃজনশীলতার মনোভাব লুকায়িত থাকে সেই জন্য পাঠক্রম গঠনের সময় লক্ষ্য করতে হবে যাতে শিক্ষার্থী সৃজনমূলক মনোভাব বা সুপ্ত সৃজনী প্রতিভার বিকাশ লাভ করেতে পারে।

4. বহুমুখীকতার নীতি :-

পাঠক্রমকে শিক্ষার্থীর উপযোগী বহুমুখী ও বৈচিত্রময় করে তুলতে হবে তার কারণ মানবীয় জীবন প্রক্রিয়ার সমন্বয়ের মাধ্যমে পাঠক্রম এর উপাদান গুলির মধ্যে বৈচিত্র আনা প্রয়োজন।

উপাদান বিন্যাসের নীতি

1. ক্রম বিন্যাসের নীতি:-

পাঠক্রম নির্বাচনের সময় পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলিকে শিশুর পরিণমন ও মানসিক বিকাশ অনুযায়ী নির্দিষ্ট বিন্যাস করতে হবে।

2. সমন্বয়ের নীতি:-

পাঠক্রমের লক্ষ্য হলো অবিভাজ্যতার নীতি অর্থাৎ পাঠক্রম গঠনের সময় বিষয়বস্তুগুলিকে বিচ্ছিন্নভাবে না রেখে প্রতিটি বিষয়ের মধ্যে অন্তর্নিহিত ধারাগুলি বিশেষভাবে সমন্বয় করা প্রয়োজন।

প্রয়োজন গত নীতি

1. ক্রম কেন্দ্রিঙ্গতার নীতি:-

জন্ডিন এর মতে লার্নিং বাই ডুয়িং অর্থাৎ কর্মের মাধ্যমে শিক্ষা এই নীতির উপর গুরুত্ব দিয়েছে। আসলে পাঠক্রম শিশুকে সক্রিয় ও জীবন কেন্দ্রিক করে তোলে।

2. নমনীয়তার নীতি :-

শিক্ষা হলো একটি গতিশীল প্রক্রিয়া, তার গতিশীলতার উপর লক্ষ্য রেখে পাঠক্রমকে হতে হবে নমনীয় ও পরিবর্তনশীল। শিক্ষার্থী ও সমাজের চাহিদার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পাঠক্রম যাতে প্রয়োজন মতো পরিবর্তন আনা সম্ভব হয় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি আলোক করতে হবে।

উপসংহার 
সুতরাং পরিশেষে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে পাঠক্রম রচনার কাজ কেবলমাত্র কয়েকটি নীতির উপর সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না শিক্ষা প্রক্রিয়া সাফল্যের জন্য বিদ্যালয়ের পরিবেশ, উপযুক্ত মূল্যায়ন প্রভৃতি বিষয়গুলির উপর সমান গুরুত্ব আরোপ করলে পাঠক্রম শিক্ষার্থীদের কাছে আকর্ষণীয় ও সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে।

Post a Comment

এই তথ্যের ব্যাপারে আরো কিছু জানা থাকলে বা অন্য কোনো প্রশ্ন থাকলে এখানে লিখতে পারেন ।