সহ পাঠক্রমিক কার্যাবলীর প্রকারভেদ

সহ পাঠক্রমিক কার্যাবলীর প্রকারভেদ - একাদশ শ্রেণীর এডুকেশন

সূচনা:-
 সহপাঠক্রমিক কার্যাবলীর অর্থ হল পাঠ্যক্রম এর সহযোগী কার্যাবলী অর্থাৎ শ্রেণীকক্ষের পুঁথিগত বিদ্যার বহির্ভূত যে সমস্ত কার্যাবলী শিক্ষার্থীর বৌদ্ধিক বিকাশের পাশাপাশি তার সামগ্রিক জীবন বিকাশের অন্যান্য দিকে সহায়তা করে এবং পাঠক্রমের পরিপূরক হিসেবে শিক্ষার উদ্দেশ্য পূরণের সহায়তা করে তাকে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলী বলে।

নিম্নোক্ত এই শিক্ষার প্রকার গুলি উল্লেখ করা হলো

1. শারীর শিক্ষামূলক কার্যাবলী
2. বিশেষ শিক্ষামূলক কার্যাবলী
3. সামাজিক কার্যবলী 

উক্ত তিন প্রকার সহপাঠক্রমিক কার্যাবলীর সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হলো

 শরীরচর্চা মূলক কার্যাবলী

1. ব্যায়াম চর্চা:-
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ এবং দেহ কাণ্ডের সঞ্চালন প্রক্রিয়াকে বলা হয় ব্যায়াম চর্চা। এই ব্যায়াম চর্চার একদিকে শিক্ষার্থী মনকে প্রফুল্ল রাখে অন্যদিকে মনের ভারসাম্য বজায় রেখে তার মধ্যে বৌদিক সম্পাদনের ক্ষমতা বৃদ্ধি বা বিকশিত করে।

2. ক্রীড়া:-
 যে প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট বিধি নিষেধ অনুসরণ করে দলগত বা দলবদ্ধভাবে অঙ্গ সঞ্চালন মূলক ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে বলা হয় ক্রীড়া। চারিত্রিক কার্যাবলীর অন্তর্গত নানা প্রকারের খেলাধুলা হয় ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল, ইত্যাদি প্রভৃতি মুক্ত জ্ঞানে শিশুর সুস্থ সবল ও নীরোগ দেহ গড়ে তোলা, শিক্ষার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক প্রতিরোধ সামাজিকতা সৌজন্যবোধ গড়ে তোলাই শরীর চর্চা মূলক কার্যাবলীর অন্যতম উদ্দেশ্য।

মানসিক কার্যাবলী

1. আত্মপ্রকাশমূলক কার্যাবলী:-

সহ পাঠ্যক্রমিক কার্যাবলীর সঙ্গে এমন কিছু বিষয় সংযুক্ত থাকে যেগুলির আত্মপ্রকাশের সহায়ক সুতরাং বলা যায় যে সকল সহপাঠক্রমিক কার্যাবলীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আত্মপ্রকাশ এর সুযোগ পায়। সেই সকল কার্যাবলীকে আত্মপ্রকাশ মূলক কার্যাবলী বলে।

 উদাহরণ হিসেবে বলা যায় সাহিত্য সভা, বিতর্ক সভা, অভিনয় এই সকল কার্যাবলীর দ্বারা শিক্ষার্থী নিজেকে প্রকাশ করার সুযোগ পায়।

2. অবসর যাপনমূলক কার্যাবলী:-
যে সকল সহপাঠ্যমূলক কার্যাবলী শিক্ষার্থীর অবসর মূলক জীবনের সহায়ক সেই সকল কার্যাবলী কে অবসর যাপনমূলক কার্যাবলী বলে। যেমন শব্দকোষ তৈরি, সাহিত্য বিষয় আলোচনা ইত্যাদি এই ধরনের কার্যাবলীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর অবসর সময় সুন্দরভাবে কাটানোর শিক্ষা লাভ করে এবং তার মধ্যে মানসিক তৃপ্তি আসে ও মানবিক দিকের বিকাশ ঘটে।

3. সৃজন মূলক কার্যাবলী:-
যে সকল কার্যাবলী শিক্ষার্থীদের সৃজন মূলক বিকাশে সহায়কতা করে সেই জাতীয় কার্যাবলী কে সৃজনাক্তার সহপাঠক্রম মূলক কার্যাবলী বলে। যেমন কবিতা, বিতর্ক, অভিনয়, সংগীত ইত্যাদি এই কার্যাবলী শিক্ষার্থীর সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে নান্দনিক রুচিবোধ মূল্য বোধ তৈরি করে।

সামাজিক কার্যাবলী

1. সেবামূলক কার্যাবলী:-
শিক্ষার উদ্দেশ্য হবে শিক্ষার্থীকে সামাজিক গুণাবলীর সঙ্গে পরিচিত করা যার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাতীয়তা ও গণতান্ত্রিক ভাব দ্বারা সঞ্চারিত হবে। তাই বলা যায় যে সকল সহপাঠক্রমিক কার্যাবলীর মধ্যে সেবামূলক মনোভাব বা দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা যায় সেই সকল কার্যাবলীকে সেবামূলক সহ পাঠক্রমিক কার্যাবলী বলে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় স্বাস্থ্য সপ্তাহ পালন, রক্তদান শিবির, এনসিসি , গ্রাম উন্নয়ন কাজে অংশগ্রহণ ইত্যাদি।

2. সামাজিক প্রশাসন মূলক কার্যাবলী:-
বিদ্যালয়ে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মধ্যে যেগুলি ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক ভাব দ্বারা ও অনুশীলনের মাধ্যমে নেতৃত্ব দানের গুণাবলী কে বিকশিত করে সেই ধরনের কার্যাবলীকে সামাজিক প্রশাসন মূলক কার্যাবলী বলে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় বিদ্যালয় সংসদ গঠন, সমবায় সমিতি সঞ্চয় প্রকল্প, নিরক্ষরতা দূরীকরণ ইত্যাদি।

মূল্যায়ন:-
সহ পাঠক্রমিক কার্যাবলীর উক্ত শ্রেণীর বিভাগগুলি পর্যালোচনার পর মূল্যায়নে এ কথা বলা যায় যে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলী শিক্ষার বৃহত্তম উদ্দেশ্য পূরণে বিশেষভাবে সহায়তা করে এবং শিক্ষার্থীদের শিক্ষণ প্রচেষ্টাকে সহজ ও বৈচিত্র্যপূর্ণ করে তুলতে সাহায্য করে তৎসম শিক্ষার্থীদের দৈহিক মানসিক সামাজিক বিকাশ ঘটিয়ে ছাত্রছাত্রীদের পূর্ণাঙ্গ বিকাশে বিশেষ গুরুত্ব পালন করে।

Post a Comment

এই তথ্যের ব্যাপারে আরো কিছু জানা থাকলে বা অন্য কোনো প্রশ্ন থাকলে এখানে লিখতে পারেন ।