কর্তার ভূত কি নিছক ভূতের গল্প নাকি রাজনৈতিক কাহিনী ব্যাখ্যাসহ লেখ।

কর্তার ভূত - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লিপিকা কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত বহুল প্রাচীন কর্তার ভূত নামক রচনাটি প্রকৃতপক্ষে একটি কথিকা।

 আলোচ্য রচনার মধ্য দিয়ে কবিগুরু তৎকালীন মানুষের চিরকালীন অভ্যাস এর তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। ভুতের কথা বলা হলেও এটি কোন ভৌতিক রহস্যময় কাহিনী নয়। এটি আবার নিছক কোন রাজনৈতিক কাহিনী ও নয়। এখানে লেখক রূপকের আড়ালে মানুষের উপর চেপে বসে থাকা চিরকালীন ধর্ম তন্ত্র ও কুসংস্কার আলোচনা করেছেন । 

ভূত বলতে এখানে অতীতকে বোঝানো হয়েছে। অতীত কাল থেকে এই আদিম মানুষের গোষ্ঠীবদ্ধ জীবন যাপনে অভ্যস্ত। এই অতীতকালে তারা তাদের সমস্ত ভাবনার চিন্তা অর্পণ করেছিল দলের প্রধান নেতা ও নেত্রী স্থানীয় ব্যক্তিদের ওপর। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে কর্তার মৃত্যু ঘটলেও তার ভূত অর্থাৎ ধর্মতন্ত্রের ধারণা এদেশের মানুষজনকে ছেড়ে যায়নি সে প্রতি পদে পদে এদের অগ্রগতির পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

ভূতের দেশের জেলখানার অনেক নিয়মে চাপা পড়ে খানি ঘোরাতে থাকা মানুষ তাদের তেজ এবং অগ্রগতির পথ কে হারিয়ে ফেলে। ভূত বলে প্রকৃতি কোন বস্তু বা শক্তির অস্তিত্ব নেই যাকে আমরা অনুভব করতে পারি। এটা কেবলমাত্র প্রাচ্যের মানুষের মনের মধ্যে বাসা বেঁধে থাকা চিরকালীন ভয় । এই ভয়ে মানুষকে সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে দেয় না। আধুনিক চিন্তা ভাবনার পথে এক পা বাড়ালেই তার মনে ভয় তাকে বলে ওঠে সে অশুদ্ধ হয়ে যাবে এবং প্রকৃতি প্রাচীন ঐতিহের এর গর্বকে হারিয়ে ফেলবে।

তাই কবিগুরুর এই রচনাকে আমরা কেবল নিছক ভূতের গল্প বা রাজনৈতিক রূপক কাহিনী বলতে পারিনা। এটা আসলে তৎকালীন কুসংস্কার ছন্ন ধর্মতন্ত্রের কবির সুতীর্ণ প্রতিবাদী রচনা।

কর্তার ভূত - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অন্যান্য প্রশ্নোত্তর

Post a Comment

এই তথ্যের ব্যাপারে আরো কিছু জানা থাকলে বা অন্য কোনো প্রশ্ন থাকলে এখানে লিখতে পারেন ।