বাংলা উপন্যাসে শরৎচন্দ্রের অবদান লেখ।
রবীন্দ্র অন্তর্বর্তী উপন্যাসের মধ্যে সর্বপ্রথম অমর কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্রের নাম স্মরণীয়।
নিপীড়িত সমাজের প্রতি সমবেদনা, বঞ্চিত নারী জাতির সংবেদনশীল মূল্যায়ন, দৈনন্দিনতার মধ্যে অ্যাডভেঞ্চার, ভন্ডামীর বিরুদ্ধে আপোষহীন জেহাদ, বাঙ্গালী নারীর বেদনার মমতাময়ী উচ্চারণ, গল্প সৃস্টির অসাধারণ ক্ষমতা প্রভৃতি উপাদানে গঠিত শরৎ উপন্যাস স্বাতন্ত্র্যে দিপিত। তার উপন্যাস গুলোকে স্পষ্টরেখ পর্বে ভাগ না করা গেলেও মোটামুটি তিনটি পর্বে ভাগ করা যায়। শরৎচন্দ্রের উপন্যাস গুলির মধ্যে বড়দিদি, মেজ দিদি, বিন্দুর ছেলে, শ্রীকান্ত, দেনা পাওনা, পথের দাবী অন্যতম।
প্রথম পর্বের উপন্যাসগুলি আকারে-প্রকারে ক্ষুদ্র এবং শিক্ষানবিশের সমস্ত লক্ষণগুলি প্রত্যক্ষ। দ্বিতীয়পর্বে শরৎচন্দ্র সমাজ জীবনের গভীর ও জটিল সমস্যার মধ্যে প্রবেশ করেছেন। তৃতীয় পর্বের উপন্যাস গুলি বিশ শতকীয় ইউরোপীয় সাহিত্যে নতুন হাওয়ায় আন্দোলিত।
শরৎ উপন্যাস এর নতুন প্রবণতা গুলি হল -
1. চরিত্র মূলে এমনকি ভাষারীতি ও বাচনভঙ্গিতে ভাবাবেগের আতিচার্য।
2. প্রায় সমস্ত উপন্যাস এ এক অভিনব পরিবার রস সৃষ্টিতে তিনি সমর্থক।
3. সামাজিক সংস্কার এবং নীতিবোধ এই বিশিষ্ট প্রশ্ন শরৎ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় সমস্যা।
4. নারী ও পুরুষ চরিত্র গুলি একটি বিশেষ প্যাটার্নে সৃষ্টি, নারীর নিরঙ্কুশ প্রিয়সি মূর্তির বদলে কল্যাণী মাতৃ ভাবনাই প্রাধান্য পেয়েছে, পুরুষেরাও পৌরুষ কাঠিন্যের বদলে পরনির্ভরশীল, উদাসীন রূপেই উপস্থাপিত।