রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গুরু নাটকের দ্বিতীয় দৃশ্য প্রথম যূনক পঞ্চককে একথা বলেছে।
এখানে উনি বলতে দাদাঠাকুরকে বলেছে।
দাদা ঠাকুর হলেন যুনকদের গুরু। কর্মচঞ্চল যুনকদের গুরু তাদের খেলার সাথী, যুনকরা শুধু কর্মেই আনন্দ খুঁজে পায়, কোন নিয়মকানুন শাস্ত্রচার যুনকদের নেই। তারা কর্ম বাদী, অবিরাম কর্ম করে চলে। দাদা ঠাকুর ও তাদের সঙ্গেই চলে তাদের কর্মে প্রেরণা দেয়।
কিন্তু অচলায়তন হাজার বছরের পুরনো শাস্ত্রে নির্দেশ ও বিধি-বিধান নিয়েই অচল অনড়। সেখানকার প্রশাসকরা এই নিয়ম তন্ত্র সুবীরতাকেই গুরুর পার্থিব বলে মনে করে। তাদের কোন কার্যে আগ্রহ নেই তারা কেবল শাস্ত্র পাঠেই ও শাস্ত্র নির্দেশ অনুসারে নিয়ম ও ব্রত পালনে আগ্রহী, এমনকি শিশু শিক্ষার্থীদের ও তারা সেভাবেই সর্বদা নিয়োজিত রাখতে চায়। তাই অচলায়তন প্রাণহীন স্থবিরতায় যান্ত্রিক হয়ে আছে। যুনকরা তাই মনে করে দাদা ঠাকুর যদি অচলায়তনের প্রাণহীন রাজত্বে পৌঁছায় তবে অচলায়তনের শিশু থেকে বৃদ্ধ সমস্ত মরা প্রাণের জোয়ার জেগে উঠবে, উচ্ছল হয়ে উঠবে আবাসিক শিক্ষার্থীরা। জ্ঞান মার্গে চলার পরে এরা কর্মকে গিয়েছ ভুলে। তারা দাদা ঠাকুরের কর্মের আদর্শে যখন মাতবে তখনই বদ্ধতা কেটে গিয়ে আসবে প্রকৃতির প্রাণোচ্ছল ছন্দ, নির্বাধ জীবনানন্দ। তাই প্রথম যূনক পঞ্চককে তাদের দাদা ঠাকুর কে অচলায়তনে নিয়ে আসার কথা বলেছে।