অতীত স্মরণ করার ক্ষেত্রে স্মৃতিকথার গুরুত্ব কি ?
স্মৃতিকথা হল এক ধরণের সাহিত্য, যেখানে লেখক তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া বা প্রত্যক্ষ করা বিভিন্ন ঘটনার বিবরণ স্মৃতি থেকে তুলে ধরেন।
স্মৃতিকথার বৈশিষ্ট্য :
1. স্মৃতিকথায় লেখক তার অতীতের কোনো স্মৃতি তুলে ধরেন।
2. এটি অতীতে ঘটে যাওয়া কোনো বাস্তব অনুভূতিকে কেন্দ্র করে লেখা হয়।
3. স্মৃতিকথায় লেখক নিজেই কথক হিসেবে কাহিনী এগিয়ে নিয়ে যায়।
4. অধিকাংশ স্মৃতিকথার লেখক নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে সমকালীন ঘটনাটির বিবরণ দেন।
5. স্মৃতিকথা গুলি উত্তমপুরুষে লেখা হয়ে থাকে।
অতীত স্মরনে স্মৃতিকথার গুরুত্ব :
1. অতীতের স্মৃতিচারণ :
স্মৃতিকথাতে একজন লেখক তার জীবনে ঘটে যাওয়া বা তার প্রত্যক্ষ করা বিভিন্ন ঘটনার বিবরণ তার স্মৃতিকথায় তুলে ধরেন। তাই স্মৃতিকথাগুলি হল বিভিন্ন অতীত ঘটনার স্মৃতিচারণ।
2. বাস্তব অভিজ্ঞতার বিবরণ:
স্মৃতিকথায় যে কাহিনি বর্ণিত বা পরিবেশিত হয় তা কোনাে ব্যক্তিবিশেষের প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষভাবে বাস্তব অভিজ্ঞতার বিবরণ বলা চলে।
3. নির্দিষ্ট স্থান ও সময়কালের ধারণা :
বেশিরভাগ স্মৃতিকথা থেকে স্থান-কাল, পাত্র সম্পর্কে অনেক ধারণা পাওয়া যায় । কোনো ব্যক্তির স্মৃতিচারণায় তৎকালীন সময়ের বিভিন্ন বিষয় প্রতিফলিত হতে দেখা যায় ।
4. প্রত্যক্ষ সাক্ষী :
বিভিন্ন ব্যক্তি একই ঘটনার প্রত্যক্ষর্শী হয়ে ঘটনার বিবরণ দেন তাই ওই বিবরণে বিবৃত তথ্যের সত্যতা বেশি থাকে।
5. ঐতিহাসিক উপাদান হিসেবে:
অতীতের ওপর লেখা বা কোনাে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার ওপর লেখা স্মৃতিকথাগুলি ইতিহাসের একটি অন্যতম মৌখিক উপাদান। স্থানীয় ইতিহাস চর্চায় এটি বিশেষ উপযোগী।
স্মৃতিকথার উদাহরন :
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তৎকালীন সময়ে ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলের বিবরণ , শিক্ষা ভাবনা, স্বদেশ ভাবনা সহ বিভিন্ন বিবরণ তার স্মৃতিকথা ' জীবনস্মৃতি ' তে তুলে ধরেন।
উপসংহার :
স্মৃতিকথাগুলি ইতিহাসের মৌখিক উপাদান হিসেবে ব্যক্ত হলেও কোনো বিশেষ মতাদর্শের প্রতি সমর্থন জানাতে গিয়ে প্রকৃত ঘটনা অতিরঞ্জিত হয়ে যায়।