শিক্ষার সার্কাস কবিতার মূলভাব ব্যাখ্যা করো ? শিক্ষাকে কেন সার্কাস বলা হয়েছে ? কবির শিক্ষা ভাবনার পরিচয় দাও?
মালয়ালম কবি আইয়াপ্পা পানিকর ছিলেন একজন আদর্শ শিক্ষাবিদ ও তার শিক্ষার সার্কাস এই সল্পায়তন কবিতাটি তারই শিক্ষা ভাবনার সুচিন্তিত প্রতিফলন। পানিকর শিক্ষাক্ষেত্রে আদর্শবাদেরই জয়গান গেয়েছেন। শিক্ষা বলতে তার কাছে উপকরণ সর্বস্ব কিন্তু তথ্যের সঞ্চয় নয়, কেবল ডিগ্রী অর্জন নয় বা সার্টিফিকেট লাভও নয় অথবা কেবল একটির পর একটি শ্রেণি উত্তরনও নয় - To more is not Education। প্রকৃত শিক্ষা হলো অন্তরের অমৃততুল্য যা শিক্ষার্থীর সর্বতোমুখী বিকাশ বা তার যুক্তিবাদী মনোনের ও তার অন্তর্নিহিত সুপ্ত শক্তির জাগরণ ঘটায়। কিন্তু বর্তমান শিক্ষায় প্রকৃত শিক্ষার কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। তাই তিনি সম্পূর্ণ বিরূপ মনেই বর্তমান শিক্ষার প্রতি কটাক্ষ করেছেন।
কথোপকথনের ভঙ্গিতে রচিত প্রশ্নকর্তা জনৈক শিক্ষার্থীকে প্রশ্ন করেছেন 'তুমি যদি প্রথম শ্রেণীতে পাস করো' শিক্ষার্থী উত্তর দিয়েছে যে সে দ্বিতীয় শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হবে। এভাবে প্রশ্নকর্তার পরপর প্রশ্নের উত্তরে সে দ্বিধাহীনভাবে বলেছে যে সে পরের শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হবে। আপাতভাবে প্রশ্নের এই পুনরাবৃত্তি ক্লান্তিকর হলেও কবিতার শেষে মূল ভাবটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সমস্ত প্রশ্ন গুলি করার পর তিনি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান --
সব শিক্ষা একটি সার্কাস
যার সাহায্যে আমরা পরের শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হই
জ্ঞান কোথায় গেল
সে যেখানে গেছে, সেটা ধোকা।
অর্থাৎ সার্কাসে যেমন কুশলী খেলোয়াড়রা দড়ির সাহায্যে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে, নিচু থেকে উঁচুতে স্থানান্তরিত হয় বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থাতেও কেবল সেই স্থানান্তর বা শ্রেণি উত্তরণই শেষ কথা। জ্ঞানার্জন সেখানে সম্পূর্ণ নির্বাসিত, শিক্ষা কেবল একটা ধোঁকা মাত্র।