রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কেন উপনিবেশিক শিক্ষার সমালোচনা করেছিলেন?

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কেন উপনিবেশিক শিক্ষার সমালোচনা করেছিলেন?


ভূমিকা: 

ব্রিটিশ শাসিত ভারতে ইংরেজি বা পাশ্চাত্য শিক্ষা কে উপনিবেশিক শিক্ষা বলে। এই শিক্ষার ভিত্তি রচিত হয়েছিল মেকলে মিনিট এর উপর ভর করে। এই শিক্ষা ছিল নৈরাজ্যবাদী, নেতিবাচক, হৃদয়হীন, মনুষ্যত্ব নাসক এবং শিক্ষার্থীদের জীবন ও পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে সম্পর্কহীন। এইজন্য রবি ঠাকুর এই শিক্ষাব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন।।

উপনিবেশিক শিক্ষার উদ্দেশ্য:

(১) উপনিবেশিক শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতে ইংরেজি জানা শিক্ষক সম্প্রদায় সৃষ্টি করা।
(২) কোম্পানীর কেরানী তৈরি করে কর্মচারীর অভাব দূর করা। 
(৩) ভারতে ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থাকে দীর্ঘায়িত করা।

উপনিবেশিক শিক্ষার সমালোচনা দিক:

(১) যান্ত্রিকতা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতে তৎকালীন ভারতে প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে কোন প্রকার প্রাণের যোগ ছিল না। যা শিক্ষার্থীদের নিষ্ক্রিয় যন্ত্রে পরিণত করেছে। তিনি আরো লিখেছেন___
ছেলেদের মানুষ করে তোলার জন্য যে যন্ত্র বা স্কুল তৈরি হয়েছে তার মধ্য দিয়ে মানব শিক্ষা সম্পূর্ণতা হতে পারে না। এই শিক্ষা থেকে তিনি মুক্তি পেয়েছেন।

(২) একাধিপত্য প্রতিষ্ঠার শিক্ষা: 
কবির মতে ভারতে প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে দেশের নাড়ির যোগ নেই। এটা ছিল একটা প্রচন্ড ছাঁচের ঢালা ব্যানার। দেশের সব শিক্ষার্থীকে এক ছাঁচে শক্ত করে জমিয়ে দেওয়া হবে। জাতির দেশবাসীর বুদ্ধিবৃত্তির উপর সম্পূর্ণ একাধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা যায়।

(৩) জাতীয়তা বিরোধী
ঔপনিবেশিক শিক্ষা ছিল জাতীয়তা বিরোধী। কারণ এটিতে সম্পূর্ণ পাশ্চাত্য আদর্শে অনুকরণ ও ধার করা বিদ্যার পুনরাবৃত্তি ঘটানো হয় এখানে যা বিদেশি ঝুলি মুখস্ত করা বা পড়ানো হতো।

(৪) মুক্তচিন্তার অভাব:
 এই শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীর মুক্তচিন্তার বিকাশ ঘটতো না।

মূল্যায়ন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বুঝতে পেরেছিলেন ইংরেজ প্রবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীর চারিত্রিক বলিষ্ঠতা, মনের প্রসারতা ও বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে। এর অভাব এর পরিপূরক হিসেবে শান্তিনিকেতনে তিনি মুক্ত মনুষ্য বোধের শিক্ষারজন্ম দিয়েছিলেন।

এই প্রশ্ন গুলিও দেখতে পারেন :

Post a Comment

এই তথ্যের ব্যাপারে আরো কিছু জানা থাকলে বা অন্য কোনো প্রশ্ন থাকলে এখানে লিখতে পারেন ।