সোমপ্রকাশ পত্রিকা থেকে তৎকালীন সমাজের কোন কোন বিষয় ইতিহাস জানা যায়?

সোমপ্রকাশ পত্রিকা থেকে তৎকালীন সমাজের কোন কোন বিষয় ইতিহাস জানা যায়?


 বাঙালির বৌতিক আলোয় তৃপ্তি মান পত্রিকা হল দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ সম্পাদিত সোমপ্রকাশ পত্রিকা । বাঙালি রাজনৈতিক জীবন এবং সমাজ সচেতনতায় সঙ্গে সমাজ সচেতন ও তার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত এই সাপ্তাহিক পত্রিকা।

প্রকাশকাল:
১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে ১৫ নভেম্বর প্রথম কলিকাতা থেকে এই পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়। পরে লেখক এর নিজ বাড়িতে সোনারপুরে চাংড়িপোতা থেকে প্রকাশিত হয়।

সোমপ্রকাশ পত্রিকার বিষয়:

 (১) চাষীদের দিক: 
এই পত্রিকায় বাংলার নীলকর সাহেবদের অত্যাচার ও চাষীদের উপর অত্যাচার ও তাদের চরম দুরবস্থা লেখালেখির পাশাপাশি পরোক্ষে কৃষক সচেতনতা সম্পর্কে লেখা-লেখি হত।

(২) সামাজিক দিক: 
সমাজ প্রচলিত বাল্যবিবাহ, বিধবা বিবাহ ,বহুবিবাহ প্রথা, স্ত্রী শিক্ষার প্রসার প্রভৃতি সম্পর্কে পক্ষে বিপক্ষে মতামত লেখালেখি হত।

(৩) রাজনৈতিক দিক: 
সোমপ্রকাশ পত্রিকায় নিয়মিত ব্রিটিশ সরকারের ও জমিদারদের শোষণ-নির্যাতন সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয় লিখে জনগণকে সচেতন করে তোলা হতো।

(৪) স্বদেশীকতার প্রচার: 
এই পত্রিকায় স্বদেশীকতার প্রচারে টিক চিহ্ন ছিল আগ্রা দরবার , ইলবার্ট বিল , পৌরসভা এর পাশাপাশি ইউরোপীয় ও দেশীয় বিচারপতিদের কার্যকলাপ ইত্যাদি।

(৫) সংবাদপত্র আইন ও প্রতিবাদ: 
ব্রিটিশবিরোধী খবর লেখালেখির জন্য লর্ড লিটন এই পত্রিকাকে সংবাদপত্র আইন এর কপি পেলে পত্রিকার সম্পাদকের জরিমানা ধার্য হয়।

সোমপ্রকাশ পত্রিকার জনপ্রিয়তা: 
আধুনিক ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে সোমপ্রকাশ পত্রিকার অবিশ্বাস্য জনপ্রিয়তার দিকে লক্ষ্য রেখে মহেন্দ্রলাল বিদ্যানিধি তার ‘বাংলা সংবাদপত্রের ইতিহাস' নামক প্রবন্ধ লিখেছেন “যাহার আবির্ভাবে ও প্রভাবে সংবাদপত্রের প্রভাব পড়ে তার নাম সোমপ্রকাশ"।

সোমপ্রকাশ পত্রিকার গুরুত্ব: 

(১) সমকালীন রাজনৈতিক ও সামাজিক সচেতনতা ও শিক্ষিত বাঙালির চিন্তাভাবনা কোন পথে চালিত হচ্ছে তা জানা যেত। 

(২) এই পত্রিকাতে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী জনমত প্রতিফলিত হত।

মূল্যায়ন:
 সুতরাং নিম্নে বলা সংগত হবে যে সোমপ্রকাশ পত্রিকা প্রতিবাদের প্রতীক ও নিরপেক্ষ রূপে সময়ের ইতিহাসের জীবন্ত দলিল হিসেবে চিহ্নিত।

আরো জানুন:

Post a Comment

এই তথ্যের ব্যাপারে আরো কিছু জানা থাকলে বা অন্য কোনো প্রশ্ন থাকলে এখানে লিখতে পারেন ।