রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষা চিন্তায় কোন দিকটি শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে বেশি ফুটে উঠেছিল?
ভূমিকা:
সাহিত্যিক, উপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, সঙ্গীতকার ও জাতীয়তা বাণী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষা চিন্তার মৌলিক প্রতিফলন শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠা (১৯১১ খ্রিস্টাব্দে)।
শিক্ষাদান পদ্ধতি:
প্রথমদিকে এই বিদ্যালয়ে শিক্ষাদান পদ্ধতি ছিল আশ্রমিক শিক্ষা। প্রাকৃতিক সান্নিধ্য থেকে গুরু শিষ্যের মধ্যে ব্যবধান দূর করে শিক্ষাদান করাই ছিল তার শিক্ষা নীতির মূল কথা। প্রথম পাঁচ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন (১৯০১ খ্রিস্টাব্দে)।
শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল অন্ত প্রকৃতির সঙ্গে বহি প্রকৃতির সম্বন্ধ সাধন। মানব সত্যির পূর্ণ বিকাশ এবং নিজেকে জাতির উপযোগী দক্ষ কল্যাণময়ী সদস্য হিসেবে গড়ে তোলা। এছাড়া শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠার অপর দিক ছিল___মানুষ, প্রকৃতি ও শিক্ষার সমন্বয় এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ভাবনার দিকটিকে তুলে ধরে বিকাশ ঘটানো।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা:
শান্তিনিকেতনের পাঠভবনের প্রবর্তিত শিক্ষানীতিতে সন্তুষ্ট হয়ে প্রাথমিক, মাধ্যমিক শিক্ষার পাশাপাশি উচ্চ শিক্ষা বিস্তারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা ভাবতে শুরু করেন এবং তার ভাবনার প্রতিফলন ঘটে বীরভূমের বোলপুরে শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা।
বিদ্যা সাধনা:
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যা সাধনার ক্ষেত্র হিসেবে তুলে ধরার জন্য তিনি বলেন____এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য উদ্দেশ্য বিদ্যা উদ্ভাসন এবং গৌণ উদ্দেশ্য বিদ্যা দান।
মুক্ত শিক্ষার প্রসার:
তিনি শিক্ষার্থীর মধ্যে মুক্ত শিক্ষার প্রসার ঘটানোর লক্ষ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানবসত্তার বিকাশ ঘটান। একাধিক শ্রেণীকক্ষ নির্মাণ, কলা বিদ্যার পাশাপাশি অস্ত্রশস্ত্র, কৃষি তথ্য স্বাস্থ্য বিদ্যা, পল্লী উন্নয়ন প্রভৃতি পার্থ তালিকার বিষয় হিসেবে স্থির করেন।
মূল্যায়ন: সুতরাং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ঔপনিবেশিক চার দেওয়ালের কেরানি তৈরির শিক্ষার সমালোচনা করে প্রাকৃতিক কোলে মুক্তচিন্তার মধ্য দিয়ে মানবসত্তার বিস্তার ঘটিয়ে জীবন শৈলী ও জীবন শিক্ষার বিকাশ ঘটাতে চেয়েছেন।
নিচের প্রশ্নগুলি দেখতে পারেন :