হুতোম প্যাঁচার নকশা গ্রন্থে উনিশ শতকের সমাজ চিত্রের বিবরণ দাও।

'হুতোম প্যাঁচার নকশা' গ্রন্থের উনিশ শতকের সমাজ চিত্রের বিবরণ দাও।


 ভূমিকা:
 কলকাতার জোড়াসাঁকোর দেওয়ান বিত্তশালী সিংহ পরিবারের সন্তান কালীপ্রসন্ন সিংহ (১৮৪০-৭০)। তিনি ছিলেন সমাজসেবক, বিদ্যোৎসাহী , বুদ্ধিমান ও সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি। সমকালীন কলকাতার বাবু সমাজে আচার কালচার রসাত্মক ভঙ্গিতে লিপিবদ্ধ করেছেন তার প্রথম হুতোম প্যাঁচার নকশা গ্রন্থ।

প্রকাশকাল: 
এই গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগ একত্রে প্রকাশিত হয় ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে।

বিষয়বস্তু:

কলকাতার সমাজজীবন: 
এই গ্রন্থে তিনি দূরে দূরে ফুটিয়ে তুলেছেন সমকালীন কলকাতার বাবুদের সমাজ জীবনে দুর্নীতি, কপটতা, ভন্ডামীর বিরুদ্ধে শাসিত ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ ছাড়াও মেম সাহেব পরিবর্তে জমিদার, মাতাল, উমেদারহঠাৎ অবতার ব্রাহ্মণ, পাদ্রী, কবি, ফোঁটা তিলক কাটা বোষ্টম, ভিকারি, প্রমুখের কার্যকলাপ গত বৃত্তান্ত।

সমাজ বিন্যাস: 
গ্রন্থটিতে তুলে ধরা হয়েছে ইংরেজি জানা ও না জানা শ্রেণি বৃত্তন্ত তিন শ্রেণীর মানুষের কার্যকলাপ।

(১) ইংরেজি শিক্ষিত সাহেবি চালচলনের অন্ধ অনুকরণকারি।
(২) ইংরেজি না জানা গোঁড়া হিন্দু সমাজ।

পূজা পার্বণ: 
লেখক তাঁর গ্রন্থে তুলে ধরেছেন দুর্গোৎসব, মহেশের রথ যাত্রা, আসর ছেলে ধরা , রামলীলা, গঙ্গায় নৌকা বিলাস , চরকা পার্বণ ইত্যাদি।

সচেতনতা দিক: 
গ্রন্থটিতে দেহকে সচেতনতার দিকের মধ্যে রয়েছে শিক্ষিকা, বিধবা বিবাহ প্রবর্তন ছাড়াও সমাজ ধর্ম ও রাজনীতি যেখানে তিনি ভন্ডামি দেখেছেন সেখানে তিনি তীব্র বিদ্যুৎ বর্ষণ করেছেন তার বৃদ্ধির চেষ্টা করেছেন।

মূল্যায়ন
সুতরাং নিম্নে বলা সং কত হবে যে সমাজ চেতনা, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের কষাঘাত, হাস্যরস সৃষ্টি, চলতি ভাষা ব্যবহারে টন পূর্ণ এবং জীবন জগতে দেখা ও সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি সব মিলিয়ে এ গ্রন্থটি বাংলা সাহিত্য এক অসামান্য সৃষ্টি।

আরো দেখুন :

Post a Comment

এই তথ্যের ব্যাপারে আরো কিছু জানা থাকলে বা অন্য কোনো প্রশ্ন থাকলে এখানে লিখতে পারেন ।