লালন ফকিরের চিন্তাধারায় ধর্ম সমন্বয় কিভাবে প্রকাশ পেয়েছে।

লালন ফকিরের চিন্তাধারায় ধর্ম সমন্বয় কিভাবে প্রকাশ পেয়েছে।


ভূমিকা:

 উনিশ শতকে বাংলার সর্বধর্ম সমন্বয়ের ক্ষেত্রে যেসব উদ্যোগে মহান ব্যক্তিদের লক্ষ্য করা গিয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন লালন ফকির _____

প্রথম জীবন: লালন ফকিরের প্রথম জীবনে বেশ কিছু বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। সম্ভবত তিনি ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে যশোর জেলার কুমারখালী থানার ভাড়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তরুণ বয়সে তিনি তীর্থ ভ্রমণে বেরিয়ে পথে গুটি বসন্ত রোগে আক্রান্ত হলে তার সঙ্গী তাকে ফেলে চলে যায়। অসুস্থ লালন জোলা তাঁতি, মলম সহ ও তার স্ত্রী মতিজানের সেবা-শুশ্রূষা পেয়ে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। পরে কুষ্টিয়ার শাহরিয়ার বসবাস শুরু করেন।

লালনের কর্ম বিশ্বাস: 

লালন না ছিলেন হিন্দু না ছিলেন মুসলমান, কেউ কেউ তাকে হিন্দু বা মুসলমান ভাবতো। কিন্তু লালনের এই নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা ছিল না। বরং একে নিয়ে তিনি গান বেঁধেছেন____
            “সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে,
     লালন বলে জাতের কি রূপ দেখলাম না এই নজরে"

বাউল গান: কোন প্রতিষ্ঠান শিক্ষাদীক্ষা না থাকলেও লালন নিজে সাধনা বলে হিন্দু ও মুসলিম ধর্ম শাস্ত্র সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে এবং মানব জীবনের আধ্যাত্বিক রহস্য নিয়ে প্রায় ২০০০ বাউল গান রচনা করেন।

লালনের ধর্ম সম্প্রদায় : বাস্তবে লালনের হিন্দু-মুসলিম সব ধর্মের মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। জাতপাতের বিরোধিতা ও ধর্মীয় রীতি নীতি পালনের তিনি ঘোর বিরোধী ছিলেন। তাই জাতি, ধর্ম, বর্ণ ,লিঙ্গ ভেদে বিরোধিতা করে গান বাঁধেন_____
       “মিলন হবে কতদিন__
   আমার মনের মানুষেরই সনে"।

ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে যোগ: জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। রবি ঠাকুর লালনের গান ও আদর্শের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। আবার গ্রামবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকা তে লালনের গান প্রকাশ করা হতো।

মূল্যায়ন: বলা বাহুল্য হবে যে বাউল সাধক লালন ছিলেন সর্ব ধর্মের ঊর্ধ্বে। তিনি ছিলেন হিন্দু মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষকে মনের মানুষ হিসাবে প্রাণ দিয়েছিলেন। যেদিকেই বিচারে তিনি ছিলেন ধর্ম সম্বন্ধ বাদী মানুষ। ১১৬ বছর বয়সে ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে তিনি দেহত্যাগ করেন।

নিচের প্রশ্নগুলি দেখুন :

Post a Comment

এই তথ্যের ব্যাপারে আরো কিছু জানা থাকলে বা অন্য কোনো প্রশ্ন থাকলে এখানে লিখতে পারেন ।