ভারতে জাতীয়তাবাদ বিকাশে হিন্দু মেলার বা চৈত্র মেলার ভূমিকা লেখ।

ভারতে জাতীয়তাবাদ বিকাশে হিন্দু মেলার বা চৈত্র মেলার ভূমিকা লেখ।


ভূমিকা:

 ভারতের জাতীয় জীবন ও তার রাজনৈতিক চিন্তাচেতনা জাগরনে চৈত্র মেলা বা হিন্দু মেলা বিশেষ স্থান অধিকারী। ব্রিটিশ শাসিত ভারতে জাতীয়তাবাদ উন্মেষের এই মেলায় বিশেষ প্রশংসার দাবিদার।

হিন্দু মেলার সদস্য: 

এই মেলার সঙ্গে যুক্ত সহযোগী সদস্য ছিলেন গিরিশচন্দ্র ঘোষ, রাজনারায়ণ বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

প্রতিষ্ঠাতা বা স্থান: 

১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতার চিৎপুরে নরসিংহ চন্দ্র বাহাদুরের বাগানবাড়িতে চৈত্র মেলা প্রতিষ্ঠিত হয়। মেলার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন নবগোপাল মিত্র এবং প্রথম সম্পাদক হন গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরসহসম্পাদক ছিলেন নবগোপাল নিজেই।

নামকরণ:

চৈত্র মেলা: কথিত যে চৈত্র মাসের সংক্রান্তিতে প্রতিবছর এই মেলা বসতো বলে এই মেলার নামকরণ। এই মেলাতে কবি, সাহিত্যিকদের নানাভাবে সম্মানিত করা হতো।

হিন্দু মেলা: এই মেলার সংগঠকদের সকল সদস্যই হিন্দু ছিল বলে হিন্দু মেলার নামে নামাঙ্কিত। আবার এই মেলা জাতীয় মেলা নামে পরিচিত ছিল।

উদ্দেশ্য:

Dr. মজুমদার এই মেলার প্রধান তিনটি উদ্দেশ্য কে চিহ্নিত করেছেন,____
 
(১) শিক্ষিত যুবকদের মধ্যে হিন্দু ধর্মের অতীত ও ঐতিহ্য গৌরব গাঁথার জাতীয় ভাবে প্রসার ঘটানো।
(২) হিন্দুদের মধ্যে আত্মনির্ভরশীলতার মনোভাব গঠন।
(৩) ভারতবাসীদের মধ্যে দেশাত্মবোধ সৃষ্টি করা।

      গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেন,____“আমাদের এই মিলন সাধনার ধর্ম-কর্মের জন্য নয়। কোন বিষয়ে সুখের জন্য নয়, আমোদপ্রমোদ নয় তা কেবল স্বদেশের জন্য, ভারতের জন্য"।

কর্মসূচি:

 এই মেলার কর্মসূচির মধ্যে ছিল লাঠি খেলা, তলোয়ার খেলা প্রদর্শনী, দেশাত্ব মূলক সংগীত পরিবেশন, বক্তব্য দান ইত্যাদি। এগুলির মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন উপায়ে জনগণকে দেশ আনুরাগে উদ্দীপিত করা হতো।

বৈশিষ্ট্য:

(১) এই রাজনৈতিক সংগঠনটির সকলেই ছিল হিন্দু।
(২) হিন্দু জাতির আদর্শে দেশবাসীকে দেশপ্রেমে জাগরিত করা হতো।
(৩) এই মেলায় স্বরচিত কবিতা ও গান পরিবেশিত হত।

গুরুত্ব: 

অনেকেই এই মেলাকে সাম্প্রদায়িক বলে মনে করলেও বাস্তবে তা নয়। National paper_এর উল্লিখিত যে হিন্দু, মুসলিম, পারসিক, খ্রিস্টান সকল ভারতীয় এক জাতীয়তায় বিশ্বাসী।
     _______এই মেলায় জাতীয় আন্দোলনের দার সবার জন্য খুলে দিতে গান পরিবেশন করেন,_____“মিলে সবে ভারত সন্তান গাও ভারতের জয় গান"।

মন্তব্য: উপাত্তের বলা সঙ্গত হবে যে, হিন্দু মেলা বাঙালির মনে ঐক্য ও আত্মনির্ভরতার বীজ বপনে সক্ষম হয়েছিল। স্বদেশবাসীর অন্তরে স্বজাত্যবোধ, সম্রুদ্ধি বৃত্তি, উন্মেষ অনে তাই এই মেলার গুরুত্ব আজও অম্লান।

আরো দেখুন :

Post a Comment

এই তথ্যের ব্যাপারে আরো কিছু জানা থাকলে বা অন্য কোনো প্রশ্ন থাকলে এখানে লিখতে পারেন ।