উচ্চ শিক্ষা বিস্তারে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা লেখ।
ভূমিকা:
আধুনিক উচ্চ শিক্ষা বিস্তারে তথা বাঙালির জ্ঞানপিপাসা পরিতৃপ্তির প্রধান কেন্দ্র হল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা প্রণালী রুপায়ন ও প্রগতিশীলতার সূত্রে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় Advence learning এ পরিণত হয়।
প্রতিষ্ঠিত:
চার্লস উডের নির্দেশনামা উপর ভিত্তি করে (১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে ) ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন এ বলে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় (১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে ২৪ জানুয়ারি)।
উদ্দেশ্য:
(১) সূচনাপর্বে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য ছিল অধীনস্থ ও অনুমোদিত স্কুল কলেজে পাঠরত ছাত্র দের পরীক্ষা গ্রহণ ও সার্টিফিকেট প্রদান।
(২) উচ্চ শিক্ষার প্রসার ঘটানো
আচার্য উপাচার্য: সনাম ধন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আচার্য ছিলেন বড়লাট লর্ড ক্যানিং এবং প্রথম উপাচার্য ছিলেন জেমস উইলিয়াম কলভিন। তবে উপাচার্য আশুতোষ মুখোপাধ্যায় এর সময়কাল ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণযুগ।
প্রথম গ্রাজুয়েট: এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনায় প্রথম BA পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।(১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে) মোট ১১জনপরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেন ২ জন। প্রথম গ্রাজুয়েট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও যদুনাথ বসু। ২৬ বছর পর ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে মহিলাদের মধ্যে প্রথম গ্রাজুয়েট হয় কাদম্বিনী গাঙ্গুলী ও চন্দ্রমুখি বসু।
শিক্ষা বিস্তার: ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে মধ্য কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৪৫ টি।এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে এছাড়া বিষয়ভিত্তিক একাধিক বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয় যথা সাইন্স বিভাগ, রেডিও ফিজিক্স বিভাগ, আইন কলেজ বিভাগ, আর্টস বিভাগ প্রকৃতি।
অর্থ দান:
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার উন্নতি কল্পে বহু ধ্বনি ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি এগিয়ে আসেন এদের মধ্যে ছিলেন বাঙালি অভিজাত তারকনাথ পালিত, রাজবিহারী ঘোষ, প্রসন্নকুমার ঠাকুর, ঈশ্বর চন্দ্র বসু, আশুতোষ মুখার্জী সহ প্রমুখ।
বৃত্তি প্রদান:
ছাত্রদের শিক্ষার উৎসাহিত করতে বৃত্তিদান এগিয়ে আসেন মুম্বাইয়ের ধনী ব্যক্তি প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ। তার নামাঙ্কিত প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ স্কলার্শিপ, ঈশান চন্দ্র স্কলার্শিপ, গ্রাফিক্স মেমোরিয়াল প্রাইস, আশুতোষ স্বর্ণ প্রভৃতি।
খ্যাতনামা অধ্যাপক:
প্রগতিশীল শিক্ষাদান ও বিস্তারের কাজে দেশ বিদেশ থেকে আগত দিকপাল অধ্যাপকদের মধ্যে রয়েছে মাদ্রাসি অধ্যাপক চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রমন বা CV রমন, দাক্ষিণাত্যে রাধাকৃষ্ণাণ, মহারাষ্ট্রের রামকৃষ্ণ ভান্ডারকর, জাপানি পন্ডিত কিমুরা ও সিংহলের শর্মন সিদ্ধান্ত প্রমুখ।
মূল্যায়ন: সুতরাং আধুনিক প্রগতিশীল উচ্চ শিক্ষা বিস্তারে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অম্লান। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কবি, সাহিত্যিক, অধ্যাপক, দার্শনিক ও বিজ্ঞানীদের আবির্ভাব হয়েছে।
নিচের প্রশ্নগুলি দেখুন :
- জাতীয় শিক্ষা পরিষদ টিকা লেখো ।
- আধুনিক বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে জগদীশচন্দ্র বসুর বসু বিজ্ঞান মন্দির এর অবদান লেখ।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষা চিন্তায় কোন দিকটি শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে বেশি ফুটে উঠেছিল?
- শিক্ষা বিস্তারে শ্রীরামপুর ব্যাপটিস্ট মিশন এর ভূমিকা লেখ।
- ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে রাজা রামমোহন রায়ের ভূমিকা লেখ।