বঙ্কিমচন্দ্রের বঙ্গদর্শন পত্রিকা কিভাবে ইতিহাস রচনার সহায়তা করেছে?

বঙ্কিমচন্দ্রের বঙ্গদর্শন পত্রিকা কিভাবে ইতিহাস রচনার সহায়তা করেছে?


   ভূমিকা:
 উনবিংশ শতকে ব্রিটিশ শাসিত ভারতে জাতীয়তাবাদ বিকাশে যে সকল পত্র-পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম হলো সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র মাসিক“ বঙ্গদর্শন পত্রিকা"।

 প্রকাশকাল: 
এই পত্রিকার প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয় ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে ১৭ মার্চ। পত্রিকাটি ৮৪ পাতার ও ৪৮ টি পরিসংখ্যা নিয়ে গঠিত। পরে ভাতা সঞ্জীব চ্যাটার্জী ও শ্রী স্বতন্ত্র মজুমদার পুনরায় এই পত্রিকার পরিসংখ্যা বের করেন।

 বিষয়:
(১) এই পত্রিকার বিষয়বস্তু ছিল বাঙালি রাজনীতির ইতিহাস, পুরাতত্ত্ব, দর্শন সাহিত্য ইত্যাদি।
(২) প্রথম বাঙালি শক্তি সাধনা, কৃষক সমস্যা ছাড়াও হিন্দু-মুসলিম সমস্যা ইত্যাদি।
(৩) এই পত্রিকায় প্রকাশিত ‘বন্দেমাতরম' ধ্বনি বিপ্লবী অর্থাৎ ভারতীয়দের জাতীয়তাবাদ গঠনে অন্যতম সহায়ক চিহ্ন ছিল। 
(৪) ইংরেজ সরকারের শোষণ ও জমিদারদের অত্যাচার এর বিভিন্ন দিক এই পত্রিকায় উল্লেখিত হত।

জনপ্রিয়তা
এই পত্রিকায় অপরিসীম জনপ্রিয়তার দিকে লক্ষ্য রেখে রবীনাথ ঠাকুর মন্তব্য করেছেন “ তখন বঙ্গদর্শনের ধুম লেগেছে বঙ্গদর্শনএলে দু পাড়ায় দুপুরবেলা কারো চোখে ঘুম থাকত না এবং বাঙালির হৃদয় একেবারে লুট করেছে"। বিপ্লবী বিপিন চন্দ্র পাল এর মতে এই পত্রিকা ভারতীয় সমাজের বিশেষ করে জন মানুষের উচ্চ স্থান অধিকার করে আছে।

তাৎপর্য:
   (১) পত্রিকা প্রকাশের মধ্য দিয়ে বাঙালি মননের ব্রিটিশবিরোধী গতি প্রকৃতি ও জনমত গঠন কিরূপ তা অনুধাবন সম্পর্কে জ্ঞান হওয়া যেত।
(২) পত্রিকায় প্রকাশিত “বন্দেমাতরম" ধ্বনি বিপ্লবীদের প্রেরণার মূল্য ছিল।
(৩) বঙ্গদর্শন পত্রিকা কে কেন্দ্র করে চন্দ্রনাথ বসু , হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, রামদাস, দীনবন্ধু মিত্রের একটি সাহিত্য গোষ্ঠী গড়ে ওঠে।

মূল্যায়ন:
 নিম্নে বলা সংগত হবে যে ব্রিটিশ বিরোধী জাতীয়তাবাদ গঠন ও আধুনিক সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে তার বঙ্গদর্শন পত্রিকার গুরুত্ব আজও অম্লান বাঙালির কাছে প্রাণের টান।

আরো জানুন :

Post a Comment

এই তথ্যের ব্যাপারে আরো কিছু জানা থাকলে বা অন্য কোনো প্রশ্ন থাকলে এখানে লিখতে পারেন ।