অলিপর্বার চরিত্র বর্ণনা করো। অথবা বনগতা গুহা অবলম্বনে সৎ পরিশ্রমী অলিপর্বার সংগ্রামী জীবনের পরিচয় দাও।
বিংশ শতকের সংস্কৃত পণ্ডিত শ্রী গোবিন্দ কৃষ্ণ মোদক আরব্য রজনীর এক জনপ্রিয় গল্প আলিবাবা ও চল্লিশ চোরের সংস্কৃত অনুবাদ চোর চত্বারিংশি গ্রন্থটি রচনা করেন। গ্রন্থের প্রথম অংশ বনগুতা নামক পাঠ্যাংশ একশত পরিশ্রমই দরিদ্র উপস্থিত বুদ্ধি সম্পন্ন যাব কাঠুরিয়ার সংগ্রামী জীবন ও দৈবকার্যে ধনভান্ডার লাভের বর্ণনার বিশ্লেষনে তার চরিত্রের কতগুলি বিশেষ দিক পাঠকসমাজে উন্মোচিত হয়েছে।
পারস্য নগরের দরিদ্র পরিবারের সহোদর ভাই অলিপর্বা ও কশ্যপ পিতার সম্পত্তি সমান ভাগে পেয়েছিল, ফলস্বরূপ তাদের সম্পদের পরিমাণ সামান্য। কিন্তু সৌভাগ্যবশত চতুর কশপ ধনির মেয়েকে বিবাহ করে নগরের অন্যান্য ধনি বণিকদের ন্যায় বিলাসব্যসনে দিন কাটাতে লাগলো, এমনকি তার কোন দুষ্প্রাপ্য রইল না। অপরদিকে প্রত্যাহারের কাঠ কেটে বিক্রি করে, অলিপর্বা তার জীবনের পরিচয় দেয় যা সমাজে আর্থিক বৈপরীত্য কে প্রকট করে ।
গল্পের নায়ক অলিপর্বার জীবন ছিল দরিদ্রতার সংগীত নিঃত্য সংগ্রামে। অল্প ধন সম্পতির জন্য স্ত্রী-পুত্রসহ পর্ণকুটির বসবাসকারী অলিপর্বা প্রতাহ ভোরে দুর্গম অরণ্যের জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করে বিক্রি করতো,সেই অর্থ দিয়ে জীবন ধারণ করতো।এই জীবন ধারন শুধু দুঃখ জনক নয় প্রাণ সংশয়ের ঝুঁকি থাকতো।
অলিপর্বার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় মেলে যখন সে গভীর অরণ্যে আকাশে উত্থিত ধূলি রাশি দেখেই দস্যুদের আগমনে নিশ্চিত হয়ে এমন জায়গায় আত্মগোপন করেছিল যেখান থেকে সে দস্যুদের কার্যকলাপ দেখতে পেলেও তাকে কেউ দেখতে পাবে না।
অলিপর্বা স্মৃতি শক্তির পরিচয় মেলে যখন তিনি দস্যু সর্দার দের উচ্চারিত গুহার দ্বার খোলা ও বন্ধের মন্ত্রটি একবার শুনেই কন্ঠ কত করেছিল, সেটি পড়ে পাঠ করে গুহার দ্বার উন্মুক্ত করে গুহার ভিতরে প্রবেশ করেছিল।
সৎ পরিশ্রমী দরিদ্র অলিপর্বা গুহায় প্রবেশ করে অজস্র সোনা, রুপোর বাট , চীনাংশুক, রাশি রাশি ভক্ষ দ্রব্য দেখেও বিশেষ লোভাকৃষ্ট না হয়ে তার গাধা তিনটি বহন ক্ষমতা অনুযায়ী সম্পত্তি নিয়ে লোভ হীনতার পরিচয় দিয়েছিল।
লেখক আধুনিক ছাত্র-ছাত্রীদের এই গল্পের মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছেন যে সৎ ভাবনার জন্যই যদি অলিপর্বার এত উন্নতি হয়, তাহলে তাদেরও শত পরিশ্রম থাকা উচিত কারণ পৃথিবীতে অজস্র মানুষ নিজের ক্ষতি সাধন করে। সৎ ভাবে জীবন যাপন করেছেন বলেই পৃথিবী এত সুন্দর ও মাধুর্যমন্ডিত।